Monday, June 16, 2014

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ অসম্ভব নয়



(বাতায়ন))
জুন ১৬, ২০১৪, সোমবার : আষাঢ় ২, ১৪২১
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ অসম্ভব নয়
মোঃ মুজিবুর রহমান
প্রকাশ : ১৬ জুন, ২০১৪
এসএসসি ও এইচএসসিসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে দেশজুড়ে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদরা এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করছেন অনেক। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে বলে মনে হয় না। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সামনে নিয়ে দেখা যায়, আজ শুধু পাবলিক পরীক্ষা নয়, বরং সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ অন্য অনেক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠছে প্রায় নিয়মিত। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছিল আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে প্রশ্নপত্র মুদ্রণ এবং তা সতর্কতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রেরণের ব্যবস্থা করা। কিন্তু তারপরও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ থেমে নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে এখন নতুন কী পদক্ষেপ নেয়া হয় সেটিই দেখার বিষয়।
এসএসসি পরীক্ষার যেসব প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় বলে পত্রপত্রিকায় খবর আসে, তার অধিকাংশই সৃজনশীল অংশের। আর সৃজনশীল অংশটি সব বোর্ডের অধীনে অভিন্ন প্রশ্নপত্র হওয়ায় এটি ফাঁস হলে দেশজুড়ে পরিচালিত পরীক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। কাজেই সৃজনশীল অংশের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন ও মুদ্রণ প্রক্রিয়ার কোনো স্তর থেকে ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা সেটা কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ সৃজনশীল অংশের প্রশ্ন প্রণেতার সংখ্যা একেবারে হাতেগোনা। ঘুরে-ফিরে নির্দিষ্ট কয়েকজনই প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত হচ্ছেন বলে খবর রয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন প্রণেতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। এছাড়া বিশেষ কোনো ধরনের প্রশ্নপত্র বিশেষ কোনো স্থান থেকে ফাঁস হয় কিনা সেটা নিয়েও অনুসন্ধান চালাতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা অসম্ভব কিছু নয়। এখন উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির যুগে একদিকে যেমন প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রকে খুব সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব, তেমনি প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে নেয়া যায় কার্যকর পদক্ষেপ। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, এখনও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সঠিক পথ খুঁজে বের করা যায়নি। কারণ দেখা যায়, খুব ঘনঘনই প্রায় সব ধরনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠছে। সর্বশেষ রাজশাহীতে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁসের খবর বেরিয়েছে গণমাধ্যমে। পরীক্ষার ঠিক আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এসব খবর বেশ উদ্বেগজনক।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে এর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও মান নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি না হয়ে পারে না। কারণ বারবার যদি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে, তাহলে এর ব্যবস্থাপনাগত কোনো ত্রটি আছে কিনা এমন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে এরই মধ্যে অনেক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা চাই, প্রশ্নপত্র ফাঁস কঠোরভাবে রোধ করা হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেধাবী শিক্ষার্থীরা। আর যারা অনৈতিকভাবে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র জোগাড় করে পরীক্ষায় অংশ নেয়, তারা লাভবান হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে শিক্ষার গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিতে পারে, এটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। অবশ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা গেছে ফাঁস হওয়া প্রশ্নগুলো ছিল সাজেশন। প্রসঙ্গত, যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশন করছেন তাদের কেউ কেউ প্রশ্নপত্রের আকারে পরীক্ষার্থীদের সাজেশন দিচ্ছেন কিনা এমন ধারণা অমূলক নয়। এ ক্ষেত্রে আমরা বলব, সাজেশন হোক আর মূল প্রশ্নপত্রই হোক, পরীক্ষার আগে যে কোনো উপায়ে এগুলো পরীক্ষার্থীদের সামনে চলে এলে তারা বিভ্রান্ত না হয়ে পারে না। এ বিভ্রান্তি নিরসনের জন্য হলেও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধের কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতে হবে দ্রুত। আমরা মনে করি, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধের সঠিক উপায় বের করা কঠিন কিছু নয়। এরই মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে অনেক সুপারিশ চলে এসেছে কর্তৃপক্ষের হাতে। কিন্তু সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কিনা সেটাই হল আসল প্রশ্ন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবেচনার জন্য প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কিছু সুপারিশ এখানে তুলে ধরা হল- ১. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে পরীক্ষা শুরুর ৮-১০ দিন আগে; ২. সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বোর্ডভিত্তিক আলাদা আলাদাভাবে প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে হবে; ৩. যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন, তাদের বাছাই করার জন্য কঠোরভাবে নৈতিকতার পরীক্ষা নিতে হবে। মডারেশনের সময় মডারেশনকারী ও অন্য সহায়ক ব্যক্তিদের কেউই যাতে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, সেল ফোন ইত্যাদি ব্যবহার না করেন তা নিশ্চিত করতে হবে; ৪. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদি কাজ পরীক্ষা পরিচালনা বিধি অনুযায়ী গোপনীয় বলে বিবেচিত হলেও প্রায়ই দেখা যায়, এ ধরনের কাজে যারা জড়িত তাদের অনেকেই বিভিন্ন গাইড বই লিখে তাতে নিজেকে প্রশ্নপত্র প্রণেতা, বোর্ড-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক পরিচয়ে পরিচিত করেন। আর শিক্ষার্থীরা এসব শিক্ষকের লেখা গাইডই বেশি পড়তে আগ্রহী হয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টাও করেন অনেকে। এ ধরনের প্রবণতা বন্ধ করতে হবে; ৫. সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী মাস্টার ট্রেইনারদের সংখ্যা বাড়াতে হবে; ৬. একই ব্যক্তি যাতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশনের সঙ্গে একবারের বেশি জড়িত না থাকেন, সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে; ৭. প্রশ্নপত্র প্রণয়নের জন্য গ্রামের স্কুল থেকে ভালো শিক্ষককে বেছে নিয়ে তাদের দিয়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করাতে হবে; ৮. যেসব শিক্ষক কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছেন বলে তথ্য রয়েছে, তাদের প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সুযোগ না দেয়া; ৯. এক বোর্ডের প্রশ্নপত্র অন্য বোর্ডের আওতাধীন শিক্ষক দিয়ে প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ; ১০. শিক্ষাবোর্ডে কর্মরতদের আন্তঃবোর্ডে বদলির ব্যবস্থা করা। এজন্য দরকার হলে শিক্ষা আইনের মাধ্যমে এডুকেশন বোর্ড রিক্রুটমেন্টস অথরিটি (ইবিআরএ) গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে দ্রুত; ১১. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি দুই বছরে একবার করে বদলি নিশ্চিত করতে হবে; ১২. সবচেয়ে বড় কথা, শিক্ষার্থী মূল্যায়ন এবং পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে।
মোঃ মুজিবুর রহমান : সহযোগী অধ্যাপক, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ
mujibur29@gmail.com

Sunday, June 15, 2014

শিক্ষা খাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, বাড়বে হতাশা



ঢাকা, রবিবার ১৫ জুন ২০১৪, আষাঢ় ১৪২১, ১৬ শাবান ১৪৩
(উপ-সম্পাদকীয়)
শিক্ষা খাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, বাড়বে হতাশা
মো. মুজিবুর রহমান
যে সরকার শিক্ষার উন্নয়নের জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে বিগত কয়েক বছর ধরে, সেই সরকারের ঘোষিত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হবে তা নিয়ে আগ্রহ ছিল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ শিক্ষানুরাগী মানুষের মনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অধিকাংশই হতাশ হয়েছেন বরাদ্দের পরিমাণ দেখে। এ হতাশার একটি রেখা ফুটে উঠেছে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে খোদ শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ায়। তিনি বলেছেন, যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে তাতে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে লক্ষ্য অর্জনের পথ সুগম হবে না। বিগত পাঁচ বছরে এ খাতটিকে অনেক উপরে তুলে আনা হয়েছে। স্কুলে ভর্তি বৃদ্ধির কারণে এখন ১৯ কোটির পরিবর্তে ৩১ কোটি বই বিনামূল্যে দিতে হচ্ছে। কারিগরিতে ভর্তি সাত গুণ বেড়েছে। তার মতে, এই যে পরিবর্তন তা প্রাপ্ত অর্থে ধরে রাখা কঠিন হবে। কাজেই বাজেটে বরাদ্দ যদি কম থাকে তাহলে প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না, সেটা একরকম নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
ঘোষিত বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ৬৬ ভাগ। এটা আগের বাজেটের তুলনায় খুব কম বলে এরই মধ্যে পত্র-পত্রিকায় উঠে এসেছে। অথচ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষা খাতে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো জরুরি ছিল। এ খাতে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের অতীত হার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১০-১১, ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে সংশোধিত বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ১৪, ১১.৪ এবং ১১.১ ভাগ। এরও আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সংশোধিত ব্যয়ই ছিল জাতীয় বাজেটের ১৪.৩ ভাগ। এবার এটা আরও কমেছে। যদিও পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রস্তাবিত বাজেটে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ২ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা বেড়েছে। আর শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ১৪ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী বরাদ্দের দিক থেকে মোট অর্থের পরিমাণ বাড়লেও মূল্যস্ফীতির তুলনায় তা গড়ে আরও কম বলে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে শিক্ষা খাতের অনেক দরকারি কাজই করা যাবে না। অপূর্ণ থেকে যাবে শিক্ষকদের বহু চাহিদা। যেখানে সরকারের লক্ষ্য ছিল, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা, সেখানে এ অপ্রতুল বরাদ্দ দিয়ে কিভাবে তা সম্ভব হবে সেটা প্রশ্ন হিসেবেই থেকে যায়।
২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এরই মধ্যে প্রায় চার বছর পার হয়ে গেছে। এটা বাস্তবায়ন করতে হলেও বিপুল পরিমাণ টাকার প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে শুধু টাকার অভাবে সন্দেহ নেই। পুরো শিক্ষা খাতকে যেভাবে সরকার খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সেটাও বিঘ্নিত হবে বলে আমরা মনে করি। কারণ কম্পিউটার প্রযুক্তির সহায়তা বাড়ানো এবং এ সেবার পরিধি বাড়াতে হলে দেশজুড়ে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে; দিতে হবে কমমূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোয় সাধারণ মানুষদের আগ্রহী করে তুলতে হলে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে প্রচুর সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। উন্নত দেশগুলো শিক্ষা খাতে প্রতিনিয়ত বরাদ্দ বাড়িয়ে চলেছে। আমরাই শুধু ব্যতিক্রম। অবশ্য দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় শিক্ষা খাতে আমাদের বরাদ্দ একটু বেশি হলেও এটা নিয়ে আত্মম্ভরিতার কিছু নেই। কারণ অনেক দেশ তাদের শিক্ষা খাতে জিডিপির যত অংশ বরাদ্দ করে আমরা করি তার প্রায় অর্ধেক। যেমন- মালদ্বীপ বরাদ্দ করছে জিডিপির ৭.৫ শতাংশ আর ভুটান করছে ৪.৭ ভাগ। এ ছাড়া অনেক দেশই ৬-এর কাছাকাছি থাকছে। অথচ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের দিক থেকে আমরা এখনো আছি জিডিপিতে তিনের নিচে।

আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার অধিকাংশই পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি প্রচেষ্টায়। বিশেষ করে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় পুরোটাই নির্ভর করছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ওপর। সরকারের তালিকাভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক, কর্মচারীদের বেতনভাতা সরকার থেকে দেয়া হলেও এদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের কোনো পরিকল্পনা বাজেটে দেখা যায় না। তাদের জন্য কোনো উদ্দীপনামূলক কর্মসূচিও আমরা দেখছি না। তাহলে প্রশ্ন উঠে, যারা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার বিশাল দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তাদের জন্য বাজেটে কী দিকনির্দেশনা থাকবে?
পাঠ্যবইয়ের উন্নয়ন, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ব্যবস্থার সংস্কার, শিক্ষার্থীর সংখ্যার বৃদ্ধির তুলনায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্তসংখ্যক পদ সৃষ্টি, যথাসময়ে শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা, পদোন্নতি ইত্যাদির জন্যও বিপুল পরিমাণ টাকার প্রয়োজনটাকা ছাড়া শিক্ষা খাতের গুণগত মান উন্নয়ন কঠিন। আর যদি সরকার শিক্ষা খাতে দুর্নীতির পরিমাণ আরো কমিয়ে আনতে পারে তাহলে অর্থের কিছুটা সাশ্রয় সম্ভব হবে। সবচেয়ে বড় কথা, সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত শিক্ষা খাতের বিভিন্ন বিশেষায়িত পদে যোগ্য ও দক্ষদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে শিক্ষায় দক্ষতা বাড়বে। আর কার্যসম্পাদনে দক্ষতা বাড়লেই প্রত্যাশিত উন্নয়ন সম্ভব। এসব দিক মনে রেখেই সংশোধিত বাজেটে শিক্ষা খাতের জন্য আর্থিক বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে দক্ষতাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা। তাহলে শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের হতাশা কিছুটা হলেও কাটবে বলে আমি মনে করি।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ
mujibur29@gmail.com
http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDZfMTVfMTRfMV80XzFfMTM3OTA2

Wednesday, June 11, 2014

অবহেলিত শিক্ষা খাত



বুধবার জুন ১১, ২০১৪ জ্যৈষ্ঠ ২৮, ১৪২১
(উপ-সম্পাদকীয়)
অবহেলিত শিক্ষা খাত
মোঃ মুজিবুর রহমান
সারা দুনিয়ায় শিক্ষা সব ধরনের উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক ও মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করলেও বাংলাদেশে খাতটি বিভিন্নভাবে উপেক্ষিত হয়ে আসছে বহুকাল ধরে। বিগত কয়েক বছরে শিক্ষা খাতে এ সরকারের অনেক সাফল্য থাকলেও শিক্ষকদের জীবনমানের তেমন দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটেনি। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তির হার বেড়েছে, ঝরে পড়া হ্রাস পেয়েছে, পড়ালেখা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে অনেক, সব ধরনের পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। অথচ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত শিক্ষকরাও অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন নানাভাবে। শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে অনেক আগে শিক্ষা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের পর আশা করা হয়েছিল, শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হবে; তাও হয়নি। তবু শিক্ষকরা আশায় বুক বেঁধে আছেন, কোনো না কোনো সময় তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে, ঘোষণা করা হবে আলাদা বেতন কাঠামো।
বলতে দ্বিধা নেই, দেশে সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা। তাদের সামাজিক মর্যাদা কতটুকু, সেটা আমাদের চারপাশে ভালো করে দেখলেই স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষকতা করাকে এখন মর্যাদাপূর্ণ কাজ বলে গণ্য করা হয় না। আমাদের সমাজে এখনো এমন ধারণা প্রচলিত, যারা অন্য কোথাও ভালো কোনো চাকরি জুটিয়ে নিতে পারেননি, তারাই অনন্যোপায় হয়ে শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশ করেন। আবার সুযোগ পেলে এ চাকরি পরিত্যাগও করেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সরকারের কাছ থেকে যে পরিমাণ বেতন পান, সেটাও দিয়ে ভালোভাবে সংসার পরিচালনা করা সম্ভব নয়। বাড়িভাড়া ভাতা হিসেবে শিক্ষকদের যে টাকা দেয়া হয়, সেটা উল্লেখ করার মতো নয়। তবু শিক্ষকদের আত্মতৃপ্তি এই যে, তারা দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন; দেশকে আলোকিত করে যাচ্ছেন।
এটা তো গেল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বঞ্চনার কথা। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও আশাব্যঞ্জক তেমন কিছু দেখা যায় না। এখনো সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা পদোন্নতিবঞ্চিত। তারা চাকরির শুরুতে যে পদে যোগদান করেন, অবসর গ্রহণের দিন পর্যন্ত প্রায় সবাই একই পদে কর্মরত থাকেন। অথচ শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষা বিভাগে যোগ্যতাভিত্তিক পদোন্নতি ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। এটা করা দূরের কথা, নিয়মিত পদোন্নতিই পাওয়া যায় না এ দেশে।
এবার আলোচনা করা দরকার সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে। এ শ্রেণীর শিক্ষকরা অন্য ক্যাডারের প্রার্থীদের সঙ্গে একই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করলেও এদের সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা তেমন একটা নেই। শিক্ষা ক্যাডার দেশের অন্যতম বড় ক্যাডার হওয়ার পরও এখানেও দেখা যায় নানা রকমের অবহেলা আর বঞ্চনা। এ ক্যাডারে কর্মরতদের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির খতিয়ান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ দুটোর মধ্যে বঞ্চনার পাল্লাই ভারী। ফলে শিক্ষা ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন প্রশাসন, পুলিশ, কর, পরিসংখ্যান ইত্যাদি ক্যাডারে। যে কেউ যে কোনো সময় এক চাকরি ছেড়ে অন্য চাকরিতে যোগদানের অধিকার রাখলেও কেন অনেকেই শিক্ষা ক্যাডার ছেড়ে অন্য ক্যাডারে যান, তার কারণ অনুসন্ধান করা কি জরুরি নয়? প্রশাসন, পুলিশ, কর ক্যাডার অনেককে আকর্ষণ করতে পারে, কিন্তু শিক্ষা ক্যাডার পারে না কেন? উন্নত দেশগুলোয় অধ্যাপকদের মর্যাদা অনেক বেশি। বাংলাদেশে তা নেই। এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে শিক্ষাজীবনের সেরা ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষক হিসেবে রাষ্ট্র নিয়োগ দেয়। আর আমাদের দেশে প্রথম সারির শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই উপেক্ষা করেন শিক্ষকতাকে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষক হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন, তারাও নিয়মিত পদোন্নতি পান না। শুধু তাই নয়, ক্যাডার চাকরির প্রধান বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত ছিল, চাকরিগত কাঠামোর দিক থেকে বিবেচনা করে সব ক্যাডারের জন্য সমমর্যাদার পদ সৃষ্টি করা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সরকারের অভিজাত ক্যাডার হিসেবে পরিচিত কয়েকটি ক্যাডারে সর্বোচ্চ সিনিয়র সচিব পদ থাকলেও শিক্ষা ক্যাডারে সমমর্যাদার তেমন পদ নেই। শিক্ষা ক্যাডারে এখনো নিয়মিত পদোন্নতি হয় না। এ সরকারের আগের আমলে বেশ কয়েকবার শিক্ষকদের পদোন্নতি হলেও তা একেবারে প্রত্যাশিত মাত্রায় ঘটেনি। যে পদে শিক্ষকদের পাঁচ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি পাওয়ার কথা ছিল, সে পদে অনেকেই আছেন দশ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে; যে পদে তিন বছর কাজ করার পর পদোন্নতি হওয়ার নিয়ম রয়েছে, সে পদে থাকতে হচ্ছে ১২ বছরেরও বেশি, আর সহযোগী অধ্যাপক পদে দুই বছর চাকরি করার পর অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার বিধান থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে দেখা যায়, শিক্ষকদের অনেকেই অধ্যাপক হওয়ার আগে ৮-১০ বছর ধরে চাকরি করে যাচ্ছেন একই পদে। তার পরও পদোন্নতির কোনো নিশ্চয়তা নেই। প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না শিক্ষকদের পদের সংখ্যা। শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরতদের পদোন্নতি নিয়ে কী ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সেটা দেখা যায় তাদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি দেখলে। এ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি এখন বিষয়ভিত্তিক পদোন্নতি বৈষম্য নিরসনে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং সহকারী অধ্যাপক পদে ব্যাচভিত্তিক দ্রুত পদোন্নতি প্রদানের দাবিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সামনে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের দিকেও এগিয়ে গেছে। আমাদের প্রশ্ন, সরকারের ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা হওয়ার পরও কেন তাদের পদোন্নতির দাবি নিয়ে অধিদফতরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে হবে? পদোন্নতির জন্য আন্দোলন করতে হবে কেন? তাহলে ক্যাডারের মর্যাদা থাকল কোথায়? অন্য অভিজাত ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কি পদোন্নতির জন্য এ ধরনের কর্মসূচি পালন করতে হয়? এ অবস্থার পরিবর্তন করা না গেলে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত মাত্রার গুণগত মান অর্জন কীভাবে সম্ভব, সেটা প্রশ্ন হিসেবেই থেকে গেল।
শিক্ষা খাত আর্থিকভাবে কতটুকু অবহেলার শিকার হয়েছে, সেটা বোঝা যায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের দিকে দৃষ্টিপাত করলেই। বাজেটে শিক্ষার জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের। কিন্তু এবারের বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে, সেটা দেখে খোদ শিক্ষামন্ত্রী হতাশ হয়েছেন বলে মনে হয় । তিনি বলেছেন, যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে, তাতে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে লক্ষ্য অর্জনের পথ সুগম হবে না। বিগত পাঁচ বছরে খাতটিকে অনেক উপরে তুলে আনা হয়েছে। স্কুলে ভর্তি বৃদ্ধির কারণে এখন ১৯ কোটির পরিবর্তে ৩১ কোটি বই বিনামূল্যে দিতে হচ্ছে। কারিগরিতে ভর্তি সাত গুণ বেড়েছে। তার মতে, এই যে পরিবর্তন তা প্রাপ্ত অর্থে ধরে রাখা কঠিন হবে। কাজেই বাজেটে বরাদ্দ কম থাকলে প্রত্যাশিত লক্ষ্য কতটুকু অর্জন সম্ভব হবে, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। এবারের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এটা আগের বাজেটের তুলনায় কম বলে এরই মধ্যে পত্রিকায় উঠে এসেছে (যুগান্তর, ০৭.০৬.১৪)অবশ্য বাজেটের ব্যয় বিভাজনে শিক্ষা ও প্রযুক্তি নামে সৃষ্ট খাতে চার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ মিলিয়ে দেখানো হয়েছে ১৩ দশমিক শতাংশ। শেষ পর্যন্ত যদি এ খাতে সংশোধিত আকারে বরাদ্দ আর বাড়ানো না হয়, তাহলে নতুন অর্থবছরে শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অনেক কাজই করা যাবে না। পাশাপাশি শিক্ষকদেরও অনেক চাহিদা পূরণ করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের অতীত হার পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০১০-১১, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে সংশোধিত বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ১৪, ১১ দশমিক ৪ এবং ১১ দশমিক ১ শতাংশ। এরও আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সংশোধিত ব্যয়ই ছিল জাতীয় বাজেটের ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অবশ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রস্তাবিত বাজেটে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ২ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা বেড়েছে। আর শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ১৪ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। আপাতদৃষ্টিতে শিক্ষা খাতে টাকার অঙ্ক বাড়লেও জাতীয় বাজেট বৃদ্ধির তুলনায় সেটা কম। আর এর সঙ্গে মূল্যস্ফীতি যুক্ত করলে গড় বরাদ্দ আরো কমে যাবে বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন। এসব দিক বিবেচনা করলে বোঝা যায়, আমাদের শিক্ষা খাতের উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নেই। মোট কথা, জাতীয় বাজেটেও খাতটি উপেক্ষিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কি শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব?
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ময়মনসিংহ
mujibur29@gmail.com