এপ্রিল ২,
২০১৪, বুধবার : চৈত্র ১৯, ১৪২০
(বাতায়ন)
রিয়েলিটি
শোর মাধ্যমে শিক্ষক নির্বাচন
মোঃ
মুজিবুর রহমান
প্রকাশ
: ০২ এপ্রিল, ২০১৪
প্রাথমিক,
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের দিয়ে ডিজিটাল কনটেন্ট
তৈরি করিয়ে তা মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাসরুমে ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে অনেক
আগেই সরকারিভাবে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর
কার্যালয়ের অধীনে পরিচালিত অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সহায়তায়
প্রথম আয়োজন করা হয় ২০১১ সালের ডিজিটাল কনটেন্ট প্রতিযোগিতা। এরপর ২০১২ সালের সেরা
শিক্ষক নির্বাচনের জন্য একই ধরনের আরেকটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এ দুটি
প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে ১০ জন করে
মোট ২০ জন সেরা শিক্ষক নির্বাচন করা হয়। পরবর্তীকালে ই-এশিয়া এবং ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সেরা শিক্ষকদের পুরস্কার হিসেবে একটি করে ল্যাপটপ প্রদান করা
হয়।
বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের কাছে পড়ালেখা আরও আনন্দদায়ক করে তোলা, শ্রেণীকক্ষে পাঠ্য বিষয়ের কঠিন ও দুর্বোধ্য বিষয়বস্তু সহজ করে তুলে ধরার প্রয়াস, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনন্দদায়ক ও শিখনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়কেই একুশ শতকের উপযোগী জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা, শিক্ষকদের উৎসাহ দেয়া এবং শিক্ষাদান কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার অন্যতম উদ্দেশ্য। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এবং নির্বাচিত কয়েকটি পিটিআইতে এখন চলছে ২০১৩ সালের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রাউন্ড। এ প্রতিযোগিতায় মোট ৪টি রাউন্ড রয়েছে। প্রথম রাউন্ড থেকে শিক্ষক বাছাই আরম্ভ হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে শেষ রাউন্ডে গিয়ে সেখান থেকে ১০ জন সেরা শিক্ষক নির্বাচন করা হবে। তাদেরই পরবর্তীকালে পুরস্কার দেয়া হবে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের কাছে পড়ালেখা আরও আনন্দদায়ক করে তোলা, শ্রেণীকক্ষে পাঠ্য বিষয়ের কঠিন ও দুর্বোধ্য বিষয়বস্তু সহজ করে তুলে ধরার প্রয়াস, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনন্দদায়ক ও শিখনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়কেই একুশ শতকের উপযোগী জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা, শিক্ষকদের উৎসাহ দেয়া এবং শিক্ষাদান কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার অন্যতম উদ্দেশ্য। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪টি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এবং নির্বাচিত কয়েকটি পিটিআইতে এখন চলছে ২০১৩ সালের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রাউন্ড। এ প্রতিযোগিতায় মোট ৪টি রাউন্ড রয়েছে। প্রথম রাউন্ড থেকে শিক্ষক বাছাই আরম্ভ হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে শেষ রাউন্ডে গিয়ে সেখান থেকে ১০ জন সেরা শিক্ষক নির্বাচন করা হবে। তাদেরই পরবর্তীকালে পুরস্কার দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত,
শিক্ষকদের তৈরি মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার ওপর ভিত্তি
করে টেলিভিশনে ২৬ পর্বের রিয়েলিটি শো সম্প্রচার করা হবে বলেও আয়োজকরা জানিয়েছেন।
রিয়েলিটি শো করতে গিয়ে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে
অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের ক্লাসরুম টিচিং সম্প্রচার করা হবে। এখানে শ্রেণী
কার্যক্রমের বিভিন্ন অংশ, বাংলাদেশের শিক্ষা বিকাশের
ইতিহাস, আধুনিক শিক্ষাক্রম, শিখন-শেখানো
প্রক্রিয়া, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ইত্যাদি নিয়ে বিভিন্ন আকর্ষণীয়
পর্ব উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া পাঠদান সম্পর্কিত নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে
প্রশ্নোত্তর পর্বেরও আয়োজন করা হবে। এসব ছাড়াও থাকবে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় পর্ব।
আয়োজকরা
যে ধরনের রিয়েলিটি শো’র আয়োজন করতে যাচ্ছেন তা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ
নতুন। এমনকি অন্যান্য দেশেও এ ধরনের রিয়েলিটি শো আয়োজন করার কথা শোনা যায় না।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আমরা যেসব রিয়েলিটি শো প্রচার হতে দেখে আসছি,
সেগুলো সাধারণত বিনোদনমূলক হয়ে থাকে। আর টেলিভিশনে প্রচারিত
টকশোগুলো মূলত রাজনীতিনির্ভর। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী,
শিক্ষকদের নিয়ে তেমন কোনো অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় না টেলিভিশনে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রচলিত রিয়েলিটি শো হয়ে থাকে বিনোদন জগতের শিল্পীদের
উপস্থিতিতে। অনেক সময় দর্শকদের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে এসব অনুষ্ঠান পরিচালনা
করা হয়। কখনও কখনও দর্শকদের নিয়ে পরিচালিত হয় প্রতিযোগিতামূলক পর্ব। দর্শকপর্বে
যারা অংশগ্রহণ করেন, তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে পুরস্কারও
দেয়া হয়। অথচ আমাদের শিক্ষকরা বরাবরই থেকে যাচ্ছেন উপেক্ষিত।
এবার
আয়োজকরা জানিয়েছেন, শিক্ষা নিয়ে
রিয়েলিটি শো হবে ভিন্ন আমেজের, যা শিক্ষাক্ষেত্রে সংযোজন
করবে নতুন মাত্রা। তাদের মতে, শিক্ষা কার্যক্রমকে একটি
আনন্দমূলক বিষয়ে পরিণত করার মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করা হবে, যেখানে বিনোদনের সুযোগ থাকবে, থাকবে
শিক্ষামূলক উপস্থাপনও। এ ধরনের অনুষ্ঠান দেখে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার প্রতি আরও
বেশি আকৃষ্ট হবে, শিক্ষকদের উদ্যম আরও বাড়বে এবং এ
অনুষ্ঠানটি সামাজিকভাবে শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।
এখানে বলা দরকার, টেলিভিশনে প্রচারের উদ্দেশ্যে রিয়েলিটি শো আয়োজন করতে গেলে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। কারণ বহু স্কুল পর্যবেক্ষণকালে আমরা দেখেছি, একেবারে গ্রামপর্যায়েও অনেক ভালো ও মেধাবী শিক্ষক রয়েছেন, যারা শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। কিন্তু তাদের খুঁজে বের করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। সবাই জানেন, মেধাবী শিক্ষকদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে এক ধরনের হতাশা কাজ করে সব সময়। ফলে তাদের অনেকেই সুযোগ খুঁজেন শিক্ষকতা ছেড়ে দেয়ার। এভাবে মেধাবী শিক্ষকরা ঝরে পড়েন। আমরা দেখি, সেরা কণ্ঠশিল্পী নির্বাচন করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এসএমএসের মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা করে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয় দেশজুড়ে। সেরা কবি-সাহিত্যিক, লেখক, অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ আরও নানাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সেরাদের বাছাই করার বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সেরা শিক্ষক বাছাই করার কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। এবার হয়তো রিয়েলিটি শো’র মাধ্যমে আমরা সেরা শিক্ষকদের দেখার সুযোগ পাব।
এখানে বলা দরকার, টেলিভিশনে প্রচারের উদ্দেশ্যে রিয়েলিটি শো আয়োজন করতে গেলে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। কারণ বহু স্কুল পর্যবেক্ষণকালে আমরা দেখেছি, একেবারে গ্রামপর্যায়েও অনেক ভালো ও মেধাবী শিক্ষক রয়েছেন, যারা শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। কিন্তু তাদের খুঁজে বের করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। সবাই জানেন, মেধাবী শিক্ষকদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে এক ধরনের হতাশা কাজ করে সব সময়। ফলে তাদের অনেকেই সুযোগ খুঁজেন শিক্ষকতা ছেড়ে দেয়ার। এভাবে মেধাবী শিক্ষকরা ঝরে পড়েন। আমরা দেখি, সেরা কণ্ঠশিল্পী নির্বাচন করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এসএমএসের মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা করে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয় দেশজুড়ে। সেরা কবি-সাহিত্যিক, লেখক, অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ আরও নানাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সেরাদের বাছাই করার বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সেরা শিক্ষক বাছাই করার কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। এবার হয়তো রিয়েলিটি শো’র মাধ্যমে আমরা সেরা শিক্ষকদের দেখার সুযোগ পাব।
এরই
মধ্যে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রতিযোগিতার প্রথম পর্ব শেষ হতে চলেছে। এ
প্রতিযোগিতায় এখন আর নতুন করে শিক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। কাজেই অবশিষ্ট
পর্বের ওপর ভিত্তি করে রিয়েলিটি শো সফল করে তুলতে হলে প্রতিযোগিতার পরবর্তী
বিষয়গুলো নিয়ে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে এখন থেকেই। বিজ্ঞাপন দিতে
হবে প্রচুর। সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে, শিক্ষা জগতে সৃজনশীল কাজ করার রয়েছে বিরাট সুযোগ, সমাজ উন্নয়নে শিক্ষকদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং মেধাবী শিক্ষকরাই
পারেন শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিকে গতিশীল রাখতে। এ
নিয়ে রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমেও প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।
আমি
মনে করি, মাল্টিমিডিয়া
কনটেন্ট প্রতিযোগিতা এবং রিয়েলিটি শো নিয়ে শুধু শিক্ষক বাতায়নে (www.teachers.gov.bd) প্রচার
চালানোই যথেষ্ট নয়। কারণ সব শিক্ষকের পক্ষে নানা কারণে ইন্টারনেট ব্যবহার করা
সম্ভব হয় না। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাও চালু নেই।
কাজেই দেশজুড়ে অবস্থিত স্কুলগুলোয় রিয়েলিটি শো সম্পর্কে জানাতে হলে ব্যবহার করা
যায় পোস্টার পেপার ও লিফলেট। এ ব্যাপারে স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা
কমিটিকে সম্পৃক্ত করা দরকার। এছাড়া জেলাপর্যায়ে অবস্থিত তথ্য অফিসের সহায়তায়ও
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রচার চালানো যেতে পারে। প্রসঙ্গত,
সেরা শিক্ষক নির্বাচনকালে নির্দিষ্ট নম্বরের ওপর ভিত্তি করে যে
মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, সেখানে জুরিবোর্ডে
যাতে পেডাগজি ও অ্যান্ড্রাগজি বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা
যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, রিয়েলিটি শো’র মাধ্যমে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়
একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যার সঠিক প্রচার এবং দক্ষতাভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক
পর্যায়ে বাংলাদেশকে আরও পরিচিত করে তুলবে। এমনকি বাংলাদেশ হতে পারে অনেক দেশের
কাছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক।
তাহলেই আয়োজকদের এ উদ্যোগ সফল হবে বলে মনে করি।
মোঃ
মুজিবুর রহমান : সহযোগী অধ্যাপক,
সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ
mujibur29@gmail.com
No comments:
Post a Comment